দৈনিক ঢাকা নিউজ ডেস্ক।।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ। সেন্টমার্টিনে দুই জন নিহতসহ প্রায় ৮০ শতাংশ ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (১৪ মে) দুপুরে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে গাছচাপা পড়ে নারীসহ ২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দমকা হাওয়া শুরু হয়। সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। প্রবল বাতাস বীচের ভেজা বালু তুলে নিচ্ছে। ঘরবাড়ির টিন, ছাউনি, কাঠ, বাঁশ উড়িয়ে নিচ্ছে। অনেক গাছ ও দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। দোকানপাট ভেঙে উড়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। জানমাল রক্ষায় দ্বীপটির ৩৭ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৫ হাজার মানুষ।
সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, এর আগে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়েও এতো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে আল্লাহর রহমত যে এবার জলোচ্ছ্বাসের পানি ঢুকেনি। তবে ঘরবাড়ি, গাছগাছালির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। মনে হচ্ছে ৮০ শতাংশের বেশি ঘড়বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘর বাড়ির টিন, ছাউনি, কাঠ, বাঁশ উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বড় বড় গাছ ও নারিকেল গাছ দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, সেন্টমার্টিন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া গেছে। কিছু এলাকায় গাছগাছালি ও ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। দুই এলাকায় বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার সংবাদ পেয়েছি। এছাড়া সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর মানুষকে সড়ক থেকে গাছ সরাতে দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছিলো। এ সময় দ্রুতবেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হয়েছে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৪৭ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ উপকূল এটি অতিক্রম করবে এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হবে।
এদিকে উপকূল অতিক্রমরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বিকাল ৩টায় মিয়ানমারের সিটুয়ের কাছ দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের স্থলভাগে চলে গিয়েছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমারে তাণ্ডবে ৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।