সালেক সুফী।।
বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারি দল এবং বিরোধী দল যুদ্ধাদেহী মনোভাব নিয়ে রাজপথে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এক দল সচেষ্ট ক্ষমতায় টিকে থাকা অন্যদল চায় ক্ষমতা পুনরুদ্ধার। ঠিক সেই সংঘাতময় বিস্ফোরক অবস্থায় রাজশাহীতে বিএনপির এক নেতা প্রধানমন্ত্রীকে কবরে পাঠানোর মতো কথা বলে হত্যার হুমকি দিলেন। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ। কোনো রাজনৈতিক নেতাই একে রাজনৈতিক বক্তব্য বলে হালকা ভাবে উড়িয়ে দিতে পারেন না। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্য সহ নিস্রংশ ভাবে হত্যা করা হয়েছে, জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকেও বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে খুন হয়েছেন।
অসংখ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নানা ভাবে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমানে যখন দেশি বিদেশী প্রতিক্রিয়াশীল চক্র প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচুত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তখন দিবালোকে এই ধরণের হুমকি প্রদানকে কোনোভাবে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই সরকার অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। হয়তো সরকারি দল এবং অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ঠিক আছে। কিন্তু একই সঙ্গে আইন কারো হাতে তুলে নেয়াও সঙ্গত হবে না।এখন দেশে হাওয়া ভোঁভোঁ নাই। যে সরকারি মদদে গ্রেনেড হামলা করে প্রতিপক্ষ দলের নেতৃত্বকে নিশ্চিন্ন করার জঘন্য কাজ করবে। তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারকে বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে.।আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
দেশে ক্রিয়াশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না থাকলেই সংঘাত , খুন খারাপি হয়ে থাকে। শুধু পাক ভারত উপমহাদেশ কেন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও রাজনৈতিক হত্যাকান্ড হয়েছে কয়েকবার। বাংলাদেশ যেভাবেই বিগত দশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষিণ এশিয়ায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। হয়তো দুর্নীতি। অর্থপাচার , গভার্নেসের অভাব নানা অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না বৈষয়িক নানা সমস্যার পরেও বাংলাদেশ ভালো মত টিকে থাকার সংগ্রাম করছে। এখন রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনাকে সরাতে হলে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই কোনো দলকে ক্ষমতায় আসতে হবে।সেটি করার জন্য নিজেদের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে।সেনাবহিনী বা বিদেশী কোনো শক্তি কোনো দলকে ক্ষমতায় বসাবে না।
আমি সরকারি দল এবং বিরোধী দলগুলিকে সংযত থেকে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রেখে কিভাবে অর্থবহ , অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায় সেটি নিশ্চিত করা উচিত। কাউকে খুন করে বা কাউকে অপকৌশলে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা হলে বিস্ফোরণ হবেই।