সালেক সুফী।।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশে প্রবাসে নানা আলোচনা সমালোচনার প্রেক্ষাপটে বহুল আলোচিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারি দলের শক্তিশালী প্রার্থীর পরাজয় নিঃসন্দেহে নানা সমীকরন নানা বিশ্লেষণের সৃষ্টি করেছে। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের হ্যাভিওয়েট প্রার্থী আজমাতুল্লাহ খান ১৬ হাজারের বেশি ভোটে হেরে গেছেন ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী গৃহবধূ জায়েদা খাতুন। নির্বাচনে আনুমানিক ৫০% ভোট পরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা এই নির্বাচনে। সাধারণভাবে বলা যায় নির্বাচন অবাধ ,সুষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ আবহে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো প্রার্থী , কোনো মহল নির্বাচন বিষয়ে কোনো ধরণের বিরূপ মন্তব্য করেন নি।
সবাই জানেন বিজয়ী জায়েদা সরকারি দলের বহিস্কৃত এবং গাজীপুর সিটি কাউন্সিলের বরখাস্ত কৃত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমগীরের মাতা। জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। বকেয়া ঋণ পরিশোধ না করার যুক্তিতে জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়।হয়তো এমনি পরিস্থিতি বিষয় আগাম উপলব্ধি করে নিজের মমতাময়ী মাকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। নির্বাচন কালে নানা বিরূপ পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীর সারাক্ষন মায়ের পাশে থাকেন। মূলত বলা চলে নির্বাচন হয়েছে সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থী এবং বহিষ্কৃত প্রাক্তন মেয়রের মধ্যে। যেহেতু মূল বিরোধী দল প্রকাশ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নি তাদের সমর্থকদের ভোট নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ধারণে ভূমিকা পালন করেছে। মোদ্দা কথা হলো নির্বাচন কমিশন অ্যাসিড টেস্ট ভালোভাবে উৎরে গেছে। প্রমান হয়েছে সরকার সহ সকল পক্ষের সদিচ্ছা থাকলে এখনো বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব। এখন দেখতে হবে এই সফল নির্বাচন প্রতীকী নির্বাচন হিসাবে নিয়ে অন্নান্য নির্বাচন একই ভাবে হয় কিনা ? এই নির্বাচন থেকে সরকারি দল এবং বিরোধী দল গুলো কি শিক্ষা নেয়। বিশেষ করে নির্বাচনটি সরকারি দলের জন্য ঘুম ভাঙার সংকেত হিসাবে বিবেচনা করা উচিত হবে। জানি জয় পরাজয়ের নানা আঙ্গিকে বিশ্লেষণ হবে। প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে ,আন্তঃদলীয় দলীয় দ্বন্দ্ব , প্রচারণা কৌশল , বিরোধীদের কোনঠাসা করার প্রচেষ্টা , বিজয়ী প্রার্থীর প্রতি ভোটারদের সহানুভূতি, নির্বাচন কমিশনের মডেল নির্বাচন করার সার্বিক প্রয়াস এবং সর্বোপরি নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে মার্কিন দূতাবাসের ভিসা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বিশেষ ঘোষণা নির্বাচনে ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত মহিলা মেয়রের জন্য শুভেচ্ছা শুভ কামনা।