বছর বছর গরুর দাম বাড়ছে। অন্যদিকে কমছে গরু ও মহিষ কোরবানির সংখ্যা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সাল মিলিয়ে গড়ে বছরে ৫৪ লাখের কিছু বেশি গরু-মহিষ কোরবানি হয়েছে। ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গড়ে ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার গরু-মহিষ কোরবানি হয়েছে। অর্থাৎ গরু-মহিষ কোরবানি কমেছে গড়ে ১৪ শতাংশ। উল্লেখ্য, গরুই বেশি কোরবানি হয়। মহিষের সংখ্যা থাকে হাজার পঞ্চাশেক।
বাজার বিশ্লেষক ও কোরবানিদাতাদের কেউ কেউ বলছেন, গরুর দাম এতটাই বেড়েছে যে অনেকে কোরবানি দিতে পারছেন না। কেউ কেউ অতীতে একটি গরু কোরবানি দিতেন, এখন দেন ভাগে। কেউ কেউ গরুর বদলে ছাগল কোরবানি দিচ্ছেন। ভাগে গরু কোরবানি দেওয়ার চেয়ে ছাগলে খরচ কম।
সার্বিকভাবেও কোরবানি কমেছে। ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে বছরে গড়ে কোরবানি হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ১১ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য প্রাণী। ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গড়ে কোরবানি হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ ৩৫ হাজার প্রাণি, যা আগের চেয়ে দুই লাখ কম। যদিও বছর বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। ফলে কোরবানি বাড়ার কথা।
কেন কমল, সেই ব্যাখ্যায় অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, আপাতদৃষ্টিতে বোঝা যায়, মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্তের অনেকে কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য হারিয়েছে। একে তো গরু-ছাগলের দাম চড়া, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতিতে তাঁদের খরচ বেড়েছে। আয়বৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ফলে একটি শ্রেণি বেশি খরচ করতে পারছে। সীমিত আয়ের মানুষেরা বিপাকে রয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল। অন্যদিকে গরু ও মহিষের দামও বেড়েছে। ফলে কোরবানি দেওয়া অনেকের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে।