সালেক সুফী।।
কিছুদিন আগে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা বাংলাদেশে আলোড়ন তুলেছিল। বিজয়ী দলকে বিমান বন্দর থেকে খোলা জিপে করে বিএফএফ ভবনে আনার পথে উৎফুল্ল বাংলাদেশিরা সারা পথে পুষ্পবৃষ্টি করে ,বাফুফে ভবনে কর্মকর্তাদের ভিড়ে ফুটবল নায়িকারাই কোনঠাসা হয়ে পড়েন।প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ,সেনাবহিনী প্রধান, বাফুফে কর্মকর্তা,বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর্থিক পুরুস্কার ঘোষণা করেন। এখন সোনা যাচ্ছে এই সোনার মেয়েরা নাকি বেতন পাচ্ছে না।অধিকাংশ পুরুস্কারের অর্থ ওদের দেয়া হয়নি। এমনকি বাফুফের অর্থের অভাবে এই বিজয়ী দলকে অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে মায়ানমার পাঠানো হচ্ছে না। কি বিচিত্র এই দেশ কি বিচিত্র আমাদের মানসিকতা?
আমার ৫০ বছরের ক্রীড়া ঘনিষ্টতার অভিজ্ঞতায় নারী ফুটবল দলের মতো এতো উচ্চ মার্গের খেলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোনো বাংলাদেশ দলকে খেলতে দেখিনি। দলটিকে সঠিক পরিচর্যা করা হলে এশীয় মানে পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করি। অথচ বিএফএফের সময় অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবে দলটি অলিম্পিক ফুটবলের বাছাই পর্বে যেতে পারলো না। লজ্জা থাকলে বাফুফে কর্মকর্তারা পদত্যাগ করতো। শুনেছি প্রধানমন্ত্রীর দফতর সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন আর দলটিকে পাঠানোর সুযোগ নাই।
দেখুন কিছ দিন আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল রাংকিংয়ে নিজেদের থেকে নিচু সারির সিসিলেসের কাছে পর্যায় বরণ করে. সেই দলটিকে মদিনায় পাঠিয়ে অনুশীলন করানোর অর্থের জোগাড় কিন্তু করেছিল বাফুফে যেভাবেই হোক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দীর্ঘ সময় ধরে সভাপতির আসনে আসীন কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাহউদ্দিন (তুর্জ) বলেছেন বাংলাদেশের ক্রীড়া প্রেমিক প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেটের মতো ফটবলও সমান ভাবে ভালোবাসেন ,নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন। কিন্তু তিনি ভিন্ন ব্যাক্তিত্বের বলে নিয়ত বিষয়টি মিডিয়ায় জানানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন না। পাঠক সাধারণের বুঝতে অসুবিধা নেই উনি কাকে উপলক্ষ করে এই কথা বলেছেনা। বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সুযোগ পেলেই কথাটি মিডিয়াকে বলেন। মাঝে মাঝে তিনি এও বলেন প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন কোন খেলোয়াড় নিয়ে। এমন যেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলে ক্রিকেটের কার্যক্রম।
সালাহউদ্দিন বলেন আর পাপন বলেন উনারা নানা কৌশলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় দুটি খেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ আঁকড়ে ধরে আছেন। দুইজনই নানা ভাবে ভিন্ন মাত্রায় বিতর্কিত। মিডিয়ায় প্রায়শই তাদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা নয়. বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়া প্রেমিক এটা খেলা দুটির জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু পাপন বা সালাহউদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর কথা বলে কিছুতেই তাদের ব্যার্থতাকে আড়াল করতে পারেন না।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নাকি বলা হয়েছে কেন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় নি? বাংলাদেশে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আছে।আমি যতদূর জানি সালাহউদ্দিন ইচ্ছা করলেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বা দেখা করতে পারেন। এই বিষয়ে এখন দুঃখ প্রকাশ না করে নিজের ক্রোম পুঞ্জিত ব্যার্থতার দায় স্বীকার করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেই পারেন। আর কত নিচে নামবে বাংলাদেশের ফুটবল।
সব বিষয়ে সরকার প্রধানকে উদ্ধৃতি দেয়া কারো কারো হীনমানষিকতার প্রয়াস। এটি নানা থাকাই বাঞ্চনীয়। আলোচ্য বিষয়ে কথা বলে সালাহউদ্দিন প্রাপনকে শুধু লজ্জিত করেননি ,নিজেও লজ্জিত হয়েছেন।