সালেক সুফী।।
শুরু হয়েছিল দেশের মাটিতে ২০২২ শেষ দিকে পরাক্রমশালী ভারতকে দেশের মাটিতে ওডিআই সিরিজে পরাজিত করে। এরপর একে একে সাদা বল ক্রিকেটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে দুই ফরম্যাটে কুপোকাত , আয়ারল্যান্ডকে দেশের মাটিতে তুলোধোনা করার পর ইংল্যান্ডের মাটিতে বৈরী পরিবেশে দুটি ম্যাচে কঠিন অবস্থান থেকে ম্যাচ এবং সিরিজ জয়. বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাই যায়। বাংলাদেশ এখন আইসিসি ওডিআই রাঙ্কিংয়ে ৩ নম্বর অবস্থানে।
সরাসরি ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা বহু আগেই অর্জন করেছে। তবুও বলবো উন্নতির আছে এখনো অনেক কিছুই।শক্তিশালী আফগানিস্তান আসছে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে। ওদের আছে সীমিত ওভার ক্রিকেটের বিশ্বমানের বেশ কিছু খেলোয়াড়। এশিয়া কাপ এবং বিশ্ব কাপের আগে বাংলাদেশের নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার শেষ সুযোগ।
স্বপ্ন আমিও দেখি বাংলাদেশের সোনালী প্রজন্মের সবাই অবসরে যাবার আগে অন্তত একটি বৈষয়িক টুর্নামেন্টের সেরা হোক।কিন্তু তাই বলে আমি নিশ্চিত করে বলবো না বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত। এখনো ব্যাটিং সূচনায় আছে দুর্বলতা , লেট অর্ডার ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চ্যাম্পিয়ন সম্ভাবনা নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নাজমুল শান্তর পরিণত হওয়া। মেহেদী মিরাজের পুরোদস্তুর অল রাউন্ডার হিসাবে বিকাশ , তাওহীদ হৃদয়ের রাজকীয় অভিষেক, হাসান মাহমুদ নামের ভদ্রবেশী ফাস্ট বোলিং ঘাতক, তাসকিন , এবাদত , মুস্তাফিজের সমন্বয়ে ম্যাচ জয়ী পেস বোলিং ইউনিট নিয়ে স্বপ্ন দেখায দোষ দেখি না।
।পাশাপাশি সাকিব ,মুশফিক ,তামিম ,লিটন আছে দলের স্তম্ভ হয়ে।আমার মনে হয় দলে এখনো অভিজ্ঞতা , বড় ম্যাচ মেজাজ নিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকতে পারে দুর্যোগের দাতা হয়ে।জানি আয়ারল্যান্ড প্রতিপক্ষ হিসাবে দুর্বল তার পড়েও যেভাবে বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ৩২০ তাড়া করে জিতেছে দলের তিন প্রধান ব্যাটসম্যান তামিম, লিটন ,সাকিব আউট হবার পরেও সেটি দলের জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসের ইঙ্গিত দেয়।
অনেক বিনিয়োগ এবং আস্থার প্রতিদান দিয়ে নাজমুল শান্ত এখন ধারাবাহিক। নবীন তাওহীদ হৃদয় প্রতিটি ইনিংসেই নিচের জাত চেনাচ্ছে। যত খেলবে তত পরিণত হবে।নতুন ভূমিকায় ফিনিশার হিসাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে মুশফিক। ব্যাট হাতে মেহেদী মিরাজের সক্রিয়তা দলকে ৫ জন জেনুইন বলার নিয়ে। খেলানোর ভরসা দিচ্ছে। যদি দ্বিতীয় খেলাটি দেখেন তাহলে বাংলাদেশ বাটিংয়ের একটু দুর্বলতা চোখে পড়বে। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান তামিম , লিটন এবং শান্ত উইকেটে স্থিত হয়েও ইনিংস বোরো করতে পারে নি।
এই দিন মুশফিক ,মিরাজ ভালো ব্যাটিং না করলে দলের অবস্থা সঙ্গিন হতো।তার পরেও ১৩ রানে শেষ ৫ উইকেট পরে যাওয়ায় লেট মিডল অর্ডার নিয়ে ভাবতে হবে।বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে মিস করছে। লেজটস খুব বড় এখন. তার পরেও বাংলাদেশ অবিস্বাশ্য ভাবে ম্যাচ জয় করে মুস্তাফিজ , হাসান মাহমুদের বিশ্বমানের বোলিং , তামিমের বোলিং পরিবর্তন মুন্সিয়ানা এবং কয়েকটি বিশ্বমানের ক্যাচ লুফে নেয়ায়।
যাহোক এই ধরণের টাইট ম্যাচ জয় দলকে পরিণত করছে। তুখোড় পেস বোলিং কোচ অ্যালেন ডোনাল্ডের পরশ পাথরের ছোয়ায় বাংলাদেশের এখন ম্যাচ জয়ী পেস ব্যাটারী। ব্যাটসম্যানরা পুঁজি দিলে বোলিং করে ম্যাচ জয়ের সামর্থ ওদের আছে।এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপ নিয়ে খুব একটা বাকি নেই। আর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে না।এখনই বিশ্বকাপের জন্য ১৫-১৬ নির্বাচন করে তাদের নিবিড়ভাবে পরিচর্যা করা দরকার।
আমি রিয়াদ , আফিফ ,মোসাদ্দেককে ১৬ জন্যে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করবো। জানিনা এশিয়া কাপ কোথায় হবে। তবে বিশ্বকাপ যেহেতু ভারতে তাই বাংলাদেশ খেলার সম্ভাব্য মাঠ গুলোর কথা ভেবে বাংলাদেশকে পরিকল্পনা সাজাতে হবে।আফঘানিস্থাকে বিরুদ্ধে অনাগত সিরিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
সাকিব যেহেতু খেলতে পারবে না অবশ্যই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে একাদশে নিতেই হবে।বলছি বাংলাদেশের ক্রমাগত সাফল্য সবাইকে আশাবাদী করেছে। তবে আকাশের সীমানায় পৌঁছাতে আরো অনেক পথ পেরুতে হবে।