সালেক সুফী।।
দুর্নীতিগ্রস্থ মাফিয়া সিন্ডিকেটের কবলে থাকা তিতাস গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থা লক্ষ লক্ষ্ অবৈধ সংযোগ ,হাজার কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন নিয়ে মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে। ইতিমধ্যেই বিতরণ এলাকায় বেশ কিছু গ্যাস লিকেজ জনিত মারাত্মক দুর্ঘটনায় যান মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক নিজেই একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁর দেড় বছরের কার্যকালে তিনি ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন, কয়েক শত কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন অপসারণ করেছেন, প্রায় ১০০ শিল্প গ্রাহকের অবৈধ গ্যাস ব্যবহার বন্ধ করেছেন, এমনিতেই তিতাস বিতরণ এলাকায় অনেক পাইপ লিনের বয়স ৩৫-৪০ বছর। যথাযথ রক্ষনাবেক্ষন এবং তদারকির অভাবে জরাজীর্ণ , অসংক্ষ ছিদ্র , তার পর প্রতিটি অবৈধ সংযোগ এবং অবৈধ পাইপ লাইনের কারণে বিতরণ ব্যবস্থা কতটা নাজুক তার প্রমান মিলেছে নিকট অতীতে ঢাকা মহানগরীতে ভীতি ছড়ানো গ্যাস লিকেজ থেকে। সৌভাগ্য গ্যাসের সঙ্গে ওডারেন্ট মেশানো ছিলো। নাহলে ভয়াবহ কিছু হতে পারতো। অন্নান্ন সরকার আমলের কথা না হয় বাদ রাখলাম , এখন প্রশ্ন হলো বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে কেন তিতাস গ্যাসের বিতরণ এলাকার গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থা এমন বিপদ গ্রস্থ হলো? এর জন্য তিতাসের কেন্দ্রীয় প্রশাসন, জ্বালানী সচিবের নেতৃত্বাধীন শক্তিশালী পরিচালক মন্ডলী , পেট্রোবাংলা , ২০০৯ -২০২৩ তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকদের কি কিছু দায় দায়িত্ব নাই ?
আমি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের সাক্ষাৎকার দেখেছি , শুনেছি। শুনলাম উনি যে সমস্ত এলাকায় অবৈধ সংযোগ বেশি সেখানে বৈধ গ্রাহকদেরও সংযোগ সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখে অবৈধ সংযোগ অপসারণ করছেন। যৌক্তিক কারণে এই কার্যক্রম সমর্থনযোগ্য না হলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে অন্য বিকল্প আছে বলে মনে হয় না।
প্রতিবেদক নিজে তিতাস গ্যাস সহ পেট্রোবাংলার ৫টি কোম্পানিতে প্রায় ৩ দশক কাজ করেছি। গ্যাস বিতরণ এলাকার বেসামাল অবস্থা দেখে সুপারিশ করবো গ্যাস ব্যবহার বিধি পুনঃবিবেচনার। নানা কারণে তিতাস , কর্ণফুলী গ্যাস , বাখরাবাদ গ্যাস বিতরণ এলাকায় গৃহাস্থলী গ্যাস ব্যবহার একটি নিদৃষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বন্ধ করে দেয়ার। যে পরিস্থিতিতে বর্তমানে তিতাস গ্যাস ব্যাবস্থাপনা পরিচালক পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন সেটি টেকসই হবে না।মাফিয়া সিন্ডিকেট নানা পন্থায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহার চালিয়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে বিতরণ ব্যবস্থা অনিরাপদ থাকবে। ঘন বসতি পূর্ণ এলাকায় নতুন করে গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নির্মাণ ব্যায়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ হবে. পুরোনো ঢাকা , নাযারনগঞ্জ , গাজীপুর এলাকায় ধীরে ধীরে গ্যাস ব্যাবহারকারীদের বিকল্প জ্বালানি যেমন এলপিজি , বিদ্যুৎ চুলা ব্যাবহারে উৎসাহিত করতে হবে।
আমি হলপ করে বলতে পারি বিতরণ পাইপলাইন নিদৃষ্ট মাত্রায় ওডারেন্ট দেয়া হলে অসংক্ষ ছিদ্র পাওয়া যাবে। এই অবস্থায় কতদিনে , কত অর্থ বিনিয়োগে বিতরণ লাইন পান স্থাপন করবে বিতরণ কোম্পানিগুলো? এতদিন ডিজিটাল ম্যাপিং , জিআইএস ,স্কাডা উপেক্ষিত থাকলেও এখন ভাবা হচ্ছে। ভালো কথা। তিতাস বিতরণ এলাকা থেকে কর্ণফুলী গ্যাসের বিতরণ এলাকা অনেক সুবিন্যস্ত। সেখানেও যে গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার নেই নিশ্চিত হবার কারণ নাই। তবে সেখানে এইচপি ডিআরএস, আইপি ডিআরএস মিটার সংযুক্ত করে , টেলিমেট্রি চালু হলে গ্যাস ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে। নতুন কোম্পানিগুলো পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস বা সুন্দরবন গ্যাসের বিতরণ ব্যাবস্থায় শুরু থেকেই ডিজিটাল ম্যাপিং এবং স্মার্ট সেন্সিং চালু থাকলে অবৈধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বাংলাদেশ ক্রমাগতই আমদানিকৃত মূল্যবান এলএনজি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। সাগর থেকে হোক অথবা নতুন আবিষ্কৃত কূপ থেকে হোক গ্যাস মূল্য কিন্তু শুল্ব হবে না।আর বিতরণ ব্যাবস্থার নিরাপত্তা এখন অত্যন্ত স্পশকাতর। সবকিছু ভেবে সাহসী কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে. তিতাস পরিচালনা পরিষদ , পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি মন্ত্রনালয় দায় এড়িয়ে চলা বন্ধ করতে হবে।প্রধান পরিদর্শক বিস্ফোরক দপ্তরকে আরো সক্রিয় হতে হবে।
If desired, certain sweetening and or flavoring and or coloring agents may be added priligy reviews