সালেক সুফী।
।দীর্ঘ তিন দশক বাংলাদেশ গ্যাস সরবরাহ চেনের সব পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতায় বলছি সাম্প্রতিক গ্যাস লিকেজ আতংক বিষয়ে জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা আমার কাছে ছেলেমানুষি মনে হয়েছে। সিস্টেমে গ্যাস চাহিদা কমে যাওয়ায় কোনো অবস্থায় ওভারফ্লো হয়ে গ্যাস লিকেজ স্বভাবনা নাই।গ্যাস চাহিদা কম থাকলে গ্যাস ক্ষেত্র থেকে উৎপাদন কম হবে। ২৩-২৪ এপ্রিল গ্যাসক্ষেত্র গুলোর উৎপাদন এবং আর এলএনজি মাইল মোট সরবরাহ হয়েছে ২১৬৮ এমএমসিএফডি।
স্বাভাবিক সময় থেকে ৮০০ এমএমসিএফডি কম।গ্যাস সিস্টেমে সঞ্চালন পাইপলাইন গ্যাসের সর্বোচ্চ চাপ থাকে ১০০০ পিএসআই। জিটিসিএল সঞ্চালন ব্যাবস্থার প্রান্তে সিটিগেট স্টেশন আছে।সেখানে গ্যাসের চাপ স্বয়ংক্রিয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে ৩০০-১৫০ পিএসআই সংকুচিত হয়। এর পর বিতরণ কোম্পানিগুলোর ডিস্ট্রিক্ট রেগুলেটিং স্টেশনে চাপ আরো কমিয়ে ১৫০ -৫০ পিএসআই করা হয়।
গ্রাহকের আঙিনায় গ্যাস চাপ আরো কমিয়ে ৫০ পিএসআই থেকে ১/৪ পিএসআই হয়ে থাকে। সিজিএস , টিবিএস , ডিআরএসের স্বয়ংক্রিয় তিন ধাপের নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে কোনোভাবেই উচ্চচাপের গ্যাস বিতরণ সিস্টেমে অনুপ্রবেশের সুযোগ নাই যদিনা একটি বা দুটি ডিআরএস গ্যাস রেগুলেশন ফেল না করে থাকে।
তিতাস ঢাকা বিতরণ এলাকায় গ্যাস আসে ডেমরায় তিতাস এবং জিটিসিএল সিজিএস , গাজীপুর সিজিএস , ধানুয়া সিজিএস , আশুলিয়া সিজিএস এবং সাভার সিজিএস থেকে। এর পর ঢাকা বিতরণ এলাকায় কিছু ডিআরএস আছে তিতাস গ্যাসের নিয়ন্ত্রণে। প্রতিটি রেগুলেটিং স্টেশনে একটিভ , মনিটর , রিলিফ এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে স্ল্যাম ষাট চার স্তরের উচ্চ চাপ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে. আমি নিশ্চিত তিতাস গ্যাসের কোনো একটা স্টেশন ফেল করেছে অপেরাটরদের গাফলতির কারণে। সৌভাগ্য তিতাস বিতরণ এলাকায় অধুনা ওডারেন্ট দেয়া হচ্ছে।
তাই সহস্র লিকেজ দিয়ে গন্ধযুক্ত গ্যাস নির্গত হওয়ায় জনগণ বুঝতে পেরে আতংকিত হয়েছে। মন্ত্রণালয় বা তিতাস গ্যাস চাহিদা কম থাকায় ওভারফ্লো হওয়ার ছেলে ভুলানো কথা বলা সঙ্গত হয় নি। আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি এখনো সব ডিআরএস থেকে নিদৃষ্ট মাত্রায় ওডারেন্ট দেয়া হলে ছিদ্র পথে গ্যাস লিকেজ অনুভূত হবে। সহস্র ছিদ্র যুক্ত গ্যাস লাইন নিয়ে ঢাকাবাসী ঘুমন্ত আগ্নেয় গিরির উপর বসে আছে। একজন গ্যাস প্রকৌশুলি হিসাবে আমি লজ্জিত এবং হতাশ। জ্বালানি মন্ত্রণালয় ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত ব্যার্থতার জন্য।