সালেক সুফী।।
ইদানিং বাংলাদেশে প্রিয় প্রসঙ্গ রুচির দুর্ভিক্ষ। রুচিশীল বা রুচিহীন দুই ধরণের মানুষ পক্ষে বা বিপক্ষে বলে মিডিয়ায় নিজেদের জাহির করছে। আমরা পুরানো যুগের মানুষ। ১৯৬০ স্কুল ,১৯৭০এর প্রথম ভাগে কলেজ ,বিশ্ববিদ্দালয় এবং শেষ ভাগে চাকুরী জীবনে প্রবেশ করি।আমাদের ছাত্র জীবনে সোশ্যাল মিডিয়া বলে কিছু ছিল না। ইলেকট্রনিক মিডিয়া বলতে রেডিও বাংলাদেশ এবং পিটিভি। ঢাকা কথাই নেই দেশের পল্লীপ্রান্তরে যাত্রা পালা গান হতো, স্কুল কলেজ বার্ষিক নাটক ,সাহিত্য সভা , সামাজিক অনুষ্ঠান হিসাবে নাটক ,যাত্রা ,পুতুল নাচ হতো। সারা দেশে স্নিদ্ধ সুশীল রুচি সম্মত ছায়াছবি দেখানো হতো।খুব কম মানুষের ঘরে টেলিভশন ছিল।দোল বেঁধে মানুষ কারো বাসায় সপ্তাহে এক দিন দুই দিন নাটক এবং ছায়াছবি দেখতে যেত।তখন কিন্তু রুচি হীনতা ছিল না। প্রবীণদের , শিক্ষক দের সম্মান দেখানো হতো।
স্বাধীনতার পর “আবার তোরা মানুষ হ ” রুচি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি থেকে শিক্ষাঙ্গনে দলবাজি , দখলবাজি , মাস্তানি শুরু হলো।সংক্রমণ ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়লো দেশ ব্যাপী। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মুছে গেলো.অর্থ ,পেশী সমাজে তথা দেশে ক্ষমতা অর্জনের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়ালো। রাজনীতি চলে গেলো অরাজনৈতিক ব্যাক্তিদের কাছে। ধীরে ধীরে শিল্প সংস্কৃতি গ্রাস করলো অপসংস্কৃতি।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে অপসংস্কৃতি। দেশের প্রশাসনে যেমন সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রেই চর দখলের সংস্মৃতি। শিষ্টের দমন আর দুষ্টের তোষণ যেখানে নীতি সেখানে রুচির দুর্ভিক্ষ সংগায়িত করা নিষ্প্রয়োজন।
আমি হিরো আলমের কথা বলছি না বা প্রবীণ নাট্যকারকে নিয়েও কোনো কথা বলবো না। প্রশ্ন করবো সরকার ,সরকারি দল বা প্রধান বিরোধী দল গুলোর নেতা নেত্রীদের বা তাদের লেজুবৃত্তিকারী তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের কেন বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় দেশে রুচিহীনতা সর্বত্র? কেন সর্বগ্রাসী দুর্নীতি গ্রাস করছে প্রিয় মাতৃভূমিকে? রুচিহীনতা নিয়ে ডিজিটাল দেশ বা স্মার্ট দেশ হয়ে কি লাভ হবে?