সালেক সুফী।।
১ মার্চ ২০২৩। বেঙ্গল টাইগার্সদের অভয় অরণ্য শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ইংলিশ লায়ন্স বনাম বেঙ্গল টাইগার্সদের তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ। ইংল্যান্ড ২০১৯ ওডিআই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ,২০২২ জিতেছে টি ২০ বিশ্বকাপ। উভয় ফরম্যাটেই বাংলাদেশ রাংকিংয়ে ঢের পিছিয়ে। কিন্তু ওডিআই ফরম্যাটে বিশেষত শেরে বাংলায় বাংলাদেশ দুধর্ষ দল। কিছু আগেই উপর্যুপরি দুই ম্যাচে হারিয়েছে বর্তমান মুহূর্তে সব ফরম্যাটে উড়তে থাকা ভারতকে। বিগত দশকে দাপটের সঙ্গে খেলা ৫ সেরা খেলোয়াড় সাকিব ,তামিম ,মুশফিক ,মাহম্মুদুল্লাহ আছেন দলে। সঙ্গে যুক্ত অনেক পরিণত লিটন ,মেহেদী মিরাজ ,তাসকিন ,মুস্তাফিজ। শান্ত ভালো খেলতে শুরু করেছে। যুক্ত হয়েছে তরুণ উদীয়মান তাওহীদ হৃদয়। স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই।
তবে যে নিয়েই আসুক ইংল্যান্ড কিন্তু কট্টর পেশাদার। কিছু সেরা খেলোয়াড় না আসলেও ইংরেজ বোলিং আক্রমণ কিন্তু তুখোড়। জোফরা আর্চার ,মার্ক ঊড কিন্তু গতির তুলবেন মোর উইকেট থাকলেও। ক্রিস ওকস আর স্যাম কুরান সিম এন্ড সুইং মাস্টার। আদিল রাশিদ আর মঈন আলী কিন্তু বিচক্ষণ স্পিনার। সর্বোপরি অধিকাংশ খেলোয়াড় কিন্তু উপমহাদেশের উইকেট আর পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত। ইংলিশ আক্রমণ কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিবে। তবুও বলবো রয়ে শোয়ে খেললে পরিচিত পরিবেশে ২৫০ বা তারও বেশি রান করা সাদ্ধের অতিরিক্ত নয় বাংলাদেশের। বলতে বাধা নেই পঞ্চ পাণ্ডবের মাশরাফি এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় নেই। একমাত্র সাকিব ছাড়া বাকি তিন জন তামিম ,মুশফিক ,মাহমুদুল্লার ক্রিকেট জীবনের এখন গোধূলি বেলা। নিজেদের চেনা ছন্দে খেলে দলকে আরো কিছু দেয়ার এখন মোক্ষম সময়। এই সিরিজ উভয় দলের জন্য ২০২৩ ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব কাপের প্রস্তুতির থিয়েটার।
২০১৫ এডিলেড পরাজয়ের পর সঠিক পরিকল্পনায় ইংলিশ ক্রিকেটের খোল নলচে পাল্টে গেছে। করোনা সময়ে ইংল্যান্ড নিজেদের দারুন ভাবে গুছিয়ে নিয়েছে। ওদের এক সময়ের মেন্টর অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রডনি মার্শের সঙ্গে মেলবোর্ন আলাপে শুনেছি কিভাবে সকল ফরম্যাটে প্রচুর মানসম্পন্ন খেলোয়াড় বিকশিত করেছে ওরা। এখন সব ফরম্যাটেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে ইংল্যান্ড। তবে কোনো ফরম্যাটেই অজেয় নয় ওরা। বাংলাদেশকে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।
ইংলিশ দোলে কিছু সেরা ব্যাটসম্যান নেই। ওরা গতকাল নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শেষ করলো। তবে জেসন রয , জোস্ বাটলার, ডেভিড ম্লান ,মঈন আলী কোনো অংশে কম নয়. এমনকি স্যাম কুরান , ক্রিস ওকস ,আদিল রাশিদ ব্যাট হাতে বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারেন। বাংলাদেশকে নিখুঁত লেংথ লাইন বজায় রেখে বোলিং করতে হবে. সাকিব ,মেহেদী জুটি মূল ভরসা হলেও তাসকিন ,মুস্তাফিজ ,এবাদতেও ভরসা করতে হবে. সর্বোপরি ফিল্ডিং তুখোড় হওয়া অত্যাবশ্যক।
আমি পরিস্থিতি আর পরিবেশ বিবেচনায় বাংলাদেশকে ওডিআই সিরিজে এগিয়ে রাখছি যদিও কাজটি খুব কঠিন। বাংলাদেশ কিন্তু ২০১১ ,২০১৫ ইংল্যান্ডকে বিশ্ব কাপে হারিয়েছে। দেশে খেলা শেষ ওডিআই সিরিজ ১-১ শেষ করেছে। অপেক্ষা আজ আগুন ঝরা মার্চ মাসে ইংলিশ লায়ন্সদের জন্য বাঘের ডেরায় বিপদে ফেলার।