সালেক সুফী।।
২৭ থেকে ৩১ মার্চ ছয়ে দিনে ৩ টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ চট্টগ্রামের সাগরিকায়। এর মাঝে ওরা সাফল্য ব্যার্থতায় চাঁদের এপিঠ ওপিট দুপিঠ দেখলো। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংলান্ডকে ধবল ধোলাই আর আয়ারল্যান্ডের পর পর দুই ম্যাচে দাপুটে জয়ে আকাশে উড়ছিল বাংলাদেশ। কাল সিরিজের শেষ খেলায় সেই বাংলাদেশকে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যাবধানে উড়িয়ে মাটিতে নামালো আয়ারল্যান্ড। টস জিতে ব্যাটিং করে সহজ ব্যাটিং উইকেটে সফরকারীদের সুশৃঙ্খল বোলিং আক্রমণের মোকাবিলায় ১২৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের তুখোড় অধিনায়ক পল স্টার্লিং অবশেষে বাংলাদেশ বোলিং তুলোধোনা করলে (৭৭) ৬ ওভার হাতে রেখেই ৭ উইকেটে জয় পায় সফরকারী দল। বাংলাদেশ বার্থ হয় আরো একটি সিরিজ ধবল ধোলাই অর্জনে। অনেকের মতে বাংলাদেশ কাল ম্যাচ পরিস্থিতির চাহিদা মোতাবেক নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেনি। আর আয়ারল্যান্ড আগের ম্যাচগুলো থেকে দীক্ষা নিয়ে আকর্ষণীয় ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশকে তাদের মুদ্রায় ঘায়েল করে।
বাংলাদেশের এই পরাজয়ে কোনো অজুহাত ধোপে টিকবে না।একমাত্র শামীম পাটোয়ারীর স্রোতের বিপরীত মুখী ৫১ রান ছাড়া বাংলাদেশ ইনিংসে উল্লেখ করার মতো কেউ কিছু করেনি। ইনিংস জুড়ে ছিল সাজঘরে আসা যাওয়ার পালা। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আর বেপরোয়া ব্যাটিং বাংলাদেশ ইনিংসকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। লিটন ,রনি ,শান্ত ,সাকিব ,রিশাদ ,তাসকিন সবাই উইকেট বিলিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছে।
শামীম ছাড়া শুধু তৌহিদ হৃদয় (১২) আর নাসুম আহমেদ (১৩) কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করে।প্রথম দুই ম্যাচে ভয়ডর ব্যাটিং করে ২০০ রানের অধিক সংগ্রহের পর একই ঢঙে বেপরোয়া ব্যাটিং বাংলাদেশের ভরাডুবির প্রধান কারণ। একমাত্র শামীম পাটোয়ারী ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ৪২ বলে ৫১ রানের ইনিংস উপহার না দিলে আরো বিশাল লজ্জায় পড়তো বাংলাদেশ।
সবার মাঝে কেন যেন ঢাকায় ফেরার তাড়া ছিল ,ছিল ছন্নছার ভাব। আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক বাবরিত ৭ জন বলার কমপক্ষে একটি করে উইকেট নিয়ে প্রমান করে ওরা সিরিজ শেষে বাংলাদেশকে হারানোর কৌশল খুঁজে পেয়েছে। সবচেয়ে সফল মার্ক আদায়ের ২৫ রানে ৩ উইকেট লাভ করে. বাংলাদেশের ৭ জন ব্যাটসম্যান ক্রস বাটে স্ট্রোকস নিয়ে মিড্ উইকেট অঞ্চলে উইকেট বিলিয়ে দেয়।
টীম ম্যানেজমেন্ট এদিন একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে তিন পেসার ,তিন স্পিনার খেলানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী প্রমাণিত হয়. একই উইকেটে শুরু থেকে পরিকল্পিত প্রতি আক্রমণ করে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ বোলিংকে নখদন্তহীন প্রমান করে।ওদের বিশ্বজোড়া তুখোড় ব্যাটিং খ্যাত অধিনায়ক ৪১ বলে ১০ চার আর ৪ ছক্কায় ৭৭ রানের ইনিংস উপহার দিলে ৭ উইকেটের বিশাল জয়ে বাংলাদেশের আরো একটি সিরিজ ধবল ধোলাইয়ের আনন্দ মাটিতে মিশিয়ে দেয়। বাংলাদেশ ২-১ সিরিজ জয় করে। বিশ্ব ক্রিকেটে এমন হতেই পারে।
সবদিন সবার সমান যায় না।তবে দ্বিতীয় ম্যাচ জয় করে সিরিজ করায়ত্ত করার পর সাকিব বলেছিলো অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মত ২-০ বাবধানকে ৩-০ রূপান্তর করবে। ভুল একাদশ নির্বাচন আর ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের মানিয়ে নেয়া ব্যাটিং করতে বার্থ হওয়ায় বাংলাদেশের ভরাডুবি ঘটে. প্রচন্ড ঝাকুনি খায় সাকিব ,হাতুরাসিংহের বাংলাদেশ।