সালেক সুফী।।
ইতিমধ্যে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে কেন আমি শিরোনাম দিয়েছি। ২০০৫ ফেব্রুয়ারী মাসে আমাকে তৎকালীন সরকার প্রধানের নির্দেশেই বাংলাদেশের দুই সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির সদস্য করে মায়ানমারের রাজধানী ইয়াংগুন পাঠানো হয় মায়ানমার-বাংলাদেশ -ভারত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ বিষয়ে নেগোশিয়েশনের জন্য। ওপর সদস্য ছিলেন তৎকালীন পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান মরহুম ওসমানী সাহেব। ওই সভায় ভারতের শক্তিশালী ৯ সদস্যের কমিটির সাথে রীতিমত যুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকূল মিনিটস অফ আন্ডার স্ট্যান্ডিং ( এমওইউ ) স্বাক্ষর করতে সক্ষম হই। তখনকর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমাদের ভূমিকা ব্যাপক ভাবে প্রশংসিত হয়।ফেব্রুয়ারী থেকে আগস্ট এই কয়েক মাসে একজন খুদে দেশ প্রেমিক অশুভ মহলের তৎপরতায় দেশদ্রোহী হয়ে যায়। জুলাই মাসের এক বর্ষণ মুখর রাত শেষে আমি ,সানোয়ার ,মুস্তাফিজ নলকা -বগুড়া পাইপ লাইন কমিশনিং করে গ্যাস বগুড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম। এই সময় আমার সঞ্চালন বিভাগ বিয়ানীবাজার -কৈলাশটিলা পাইপ লাইনে কনডেনসেট চুরি চক্রকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্র্যাশ করে।আমি ২০১৫ মেলবোর্ন মোনাশ বিশ্ববিদ্দালয়ে কাজ করার সময় ২০০২-২০০৬ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে কর্মরত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে জানতে পারি পেট্রোবাংলার ফরমায়েশি নির্দেশে কোনো এক ব্যারিস্টার আমার কর্মকান্ডকে রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলে মতামত দিয়েছিলেন।অনুযোগ করছি না। উক্ত সরকারি কর্মকর্তা নিজেও মুক্তিযোদ্ধা এবং উনি জানেন খুলনা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের আগে ,সময় এবং পরে কি কাজ আমি করেছি।
তিতাস গ্যাসের কর্ম জীবন।
টঙ্গী -সাভার গ্যাস লাইনের ঠিকাদার ছিল বাংলাদেশের সর্ব প্রথম উচ্চ গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাতা বাংলাদেশ গ্যাস। স্বাধীনতার আগে এই প্রতিষ্ঠান পাক গ্যাস হিসাবে কর্মরত ছিল। আমার কাজে সহকর্মি বিশেষ করে পিডিডি প্রধান মরহুম মাহমুদ রশিদ অনেক প্রশংসা করেছিলেন। ১৯৭৮ টঙ্গী ডাইভারশন সড়ক দিয়ে প্রতিদিন টঙ্গী যেতাম এবং দিনশেষে ফিরে আসতাম। তখন বোনের পরে ছিল ধু ধু এলাকা। খিলক্ষেত এবং উত্তরা ছিল জন মানব হীন।
এই সময় মিন্টু, জামাল ,খালেদ তিন বন্ধু তিতাস গ্যাস যোগদান করে।বুয়েট সহপাঠী জহির এবং মাহমুদুর রহমান (বুল্বুল) আগে থেকেই কর্মরত ছিল।এই সময়ে শের খান এবং সাফা ভাই চাকুরী নিয়ে বিদেশ চলে যাওয়ায় ওনাদের কাজ গুলো আমি, মিন্টু, জামাল ভাগ করে নেই।আমাকে গাজিপুর এলাকায় গ্যাস বিতরণ লাইন , নতুন ঢাকার গুলশান ,বনানী এলাকার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ তদারকির কাজ দেয়া হয়। সেই সময় আমরা অধিকাংশ রোড ক্রসিং কাজ রাত বারোটার পর করতাম। মিন্টু এবং আমার সাথে অনেক ঘনিষ্টতা গড়ে উঠে।আমি ওই সময় বিচিত্রা , ক্রীড়াজগৎ সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ক্রীড়ালেখক হিসাবে জন প্রিয় ছিলাম। থাকতাম বন্ধু ( বর্তমানে শুনছি তুরুস্কে আছে) মাহমুদুর রহমান একসঙ্গে মদ্ধ বাসাবোতে একটি ভাড়া করা বাসায়। আমি ,বুল্বুল, মং এবং খালিদ ছিলাম খেলার মাঠের নিত্য দর্শক। দুই বছর আমি আর বুল্বুল একই বাসায় একই রুমে থেকেছি আপন ভাইয়ের মতো।ওর স্নেহশীল মা আমাকেও ছেলের মতো দেখতেন। পর্যায়ক্রমে জানাবো অনেক কিছুই কিভাবে আমাদের সম্পকে ফাটল ধরে।
এই সময় তিতাস গ্যাস একটি কঠিন প্রকল্প গ্রহণ করে। হবিগঞ্জের শাহজীবাজার গ্যাস ক্ষেত্র থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ১২ ইঞ্চি বাসের গ্যাস পাইপ লাইন কাজ তিনটি ভাগ করে বাংলাদেশী ঠিকাদার দের নির্মাণ দায়িত্ব দেয়া হয়।বন্ধু জামাল মিন্টু যৌথভাবে শাহজিবাজার থেকে মাধবপুর ,আমি মাধবপুর থেকে তিতাস নদীর পশ্চিম পাড় এবং বন্ধু জহিরের দায়িত্ব পরে তিতাস নদী ক্রসিং সহ আশুগঞ্জ চৰ্চাতলা পর্যন্ত। এই পাইপলাইন নির্মাণ অভিজ্ঞতা লিখতে হলে অনেক কিছু জানাতে হবে। এই প্রকল্প আমাকে যেমন পাইপ লাইন নির্মাণ কাছে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে শিখিয়েছে একই সঙ্গে ঘটনাক্রমে আমার ব্যাক্তিগত বেপরোয়া জীবন যাপন গতিধারা পাল্টে দিয়েছে। আমি ব্রহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণীর প্রেমে পরে কুমার জীবনের অবসান ঘটিয়েছি। জানাবো বিস্তারিত পরের পর্বে।
চলবে।