আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সাতটি তেল রপ্তানিকারক আরব দেশ ও রাশিয়া পৃথক বিবৃতি দিয়ে তেল উৎপাদন দিনে প্রায় ১৫লাখ ব্যারেল কমানোর কথা ঘোষণা করেছে। এ উৎপাদন হ্রাসের সমন্বয় করেছে তেল রপ্তানিকারক বড় দেশ সৌদি আরব। তেল উৎপাদন বাড়ানোর মার্কিন চাপ থাকা সত্ত্বেও দেশটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৌদি আরব ও রাশিয়া বলছে যে, বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সৌদি জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন যে, তেল বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সৌদি প্রেস এজেন্সি রোববার একথা বলেন। রিয়াদ ঘোষণা করেছে যে, তারা দিনে ৫ লাখ ব্যারেল, ইরাক ২ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ১ লাখ ৪৪ হাজার ব্যারেল, কুয়েত ১ লাখ ২৮ হাজার ব্যারেল, আলজেরিয়া ৪৮ হাজার ব্যারেল এবং ওমান ৪০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাবে। ওপেক+ রাশিয়া বলেছে , তারাও দিনে ৫ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাস করবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত মস্কো এটি করবে। তারা একে ‘দায়িত্বশীলতা ও প্রতিরোধমুলক’ ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করেছে।
গত অক্টোবর মাসে ওপেক ও রাশিয়া তেল উৎপাদন হ্রাস করার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়। ওপেক ও ওপেক+ বলে পরিচিত তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো । তারা দিনে ২০ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমানোর সিদ্দান্ত নেয়। ২০২০ সালে করোনা মহামারির পর থেকে এটি হলো সবচাইতে বড় তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘটনা। এতে মুদ্রাস্ফিতি বাড়ে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার আরো বাড়াতে বাধ্য হয়।
করোনার পর নতুনকরে সব খুলে দেয়ার পর বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ চীনে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র তেল উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানায়। এ আহ্বানকে উপেক্ষা করে তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলো।
গত মাসে হিউস্টনে এক জ্বালানী সম্মেলনে অর্থনীতি, জ্বালানী ও পরিবেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী জোস ফারনান্ডেজ বলেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও চাহিদা বাড়ার কারণে চাহিদা বাড়বে, সেজন্যে সরবরাহও বাড়ানোর হোক, এটি চায় যুক্তরাষ্ট্র।’
ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রায়ই তেল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য রপ্তানিকারক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওপেক তার পূর্বাভাসে জানায় যে, চাহিদা দিনে ২৩ লাখ ব্যারেল বাড়বে বলে তারা আশা করছেন। এতে দিনে গড় চাহিদা দাঁড়াবে ১০ কোটি ১৮ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল।