সালেক সুফী।।
মিডিয়া সূত্রে জাতি জানছে কয়লা ক্রয় বাবদ ক্রোম পুঞ্জিত ৩০ কোটি ডলার পরিশোধ বকেয়া থাকায় অচিরেই পায়রা আমদানিকৃত ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্ট উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি এবং চীনের সিএমসি যৌথ মালিকানায় নির্মিত এবং প্রচলিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য কয়লা ক্রয়ের দায়িত্ব সিএমসির. একটি নিদৃষ্ট চুক্তির অধীনে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা ক্রয় করা হয়। কয়লা ক্রয় বাবদ ১০ হাজার কোটি ডলার বকেয়া থাকায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ হবার পরিস্থিতি হয়েছে। বর্তমানে প্লান্টে ১৫ দিন ব্যবহারের কয়লা মজুদ আছে. এখন দেশে বিদ্যুতের চাহিদা তুঙ্গে। গরম যত বাড়ছে চাহিদাও বাড়ছে। পায়েরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পূর্ণ ক্ষমতায় চালু থাকা এখন অপরিহার্য। এরই মাঝে ডলার সংকটে কয়লা কিনতে বার্থ হয়ে এবং কারিগরি ত্রুটির ফলে কয়েকবার উৎপাদন স্থগিত হয়েছে। এদিকে গ্যাস উৎপাদন ক্রমাগত কমতে থাকায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করেও গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ প্লান্টগুলোকে চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এমনকি ডলার সংকটে চাহিদা মোতাবেক তরল জ্বালানি আমদানী করতে না পারে সেখানেও সংকট আছে। এমতাবস্থায় ২৩,৩৩২ মেগাওয়াট গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুৎ ক্ষমতা নিয়েও জুন ২০২৩ থেকে জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকট ঘনীভূত হতে পারে।
কিছুদিন আগে জ্বালানি উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন সরকার জ্বালানি ক্রয়ের জন্য ডলার ক্রয়ের ব্যবস্থা করায় গ্রীস্মকালে সংকট হবে না।পাওয়ার সেল মহাপরিচালক যথারীতি বলছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন থাকবেই কেন বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা টেকসই হচ্ছে না?
বর্তমান সরকার ২০০৯ থেকে ২০২৩ প্রায় ১৪ বছর ৬ মাস রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। কেউ অস্বীকার করবে না বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বহুগুণে বেড়েছে, সারা দেশ বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় এসেছে। কিন্তু পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল প্রাথমিক জ্বালানি আয়োজনে সরকারের বার্থ কৌশলের কারণে বিপুল বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা নিয়েও ধুঁকছে বিদ্যুৎ খাত। সরকার নিজেদের কয়লা উৎপাদনে সিদ্ধান্তই নিতে পারে নি, গ্যাস তেল অনুসন্ধান হয়েছে ন্যূনতম , ঝুঁকি ব্যাবস্থাপনা না করেই আমদানিকৃত জ্বালানির দিকে গেছে বাংলাদেশ। ফলশ্রুতিতে নানা কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজার অস্থির হয়ে পড়ায় সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ।
প্রশ্ন আছে কেন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লা তুলছে না বাংলাদেশ? কেন বাংলাদেশ যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে গ্যাস অনুসন্ধান ,উত্তোলন করছে না এখনো? কেন সঠিক ব্যাবস্থাপনার অধীনে সৌর বিদ্যুৎ এবং অন্নান্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানির যোগান বাড়ানো হচ্ছে না?
উত্তর একটাই সরকারের উপদেষ্টারা সরকারকে ভ্রান্ত উপদেশ দিয়ে বিভ্রান্ত করে জ্বালানি নিরাপত্তা অনিশ্চিত করে রেখে ঘোলা পানিতে জ্বালানি সিন্ডিকেটকে মাছ শিকার করার সুযোগ দিচ্ছে।