সালেক সুফী।।
বয়স এবার ৬৯ পেরিয়ে ৭০ হতে চললো। ২০০৫ থেকে ১৯ বছর প্রবাস জীবন। এরই মাঝে শুধু একবার বাংলাদেশে ঈদ উৎযাপনের সুযোগ হয়েছিল ২০১৬ সালের কুরবানী ঈদ।তও ওই সময় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হয়ে সজ্জাসায়ী ছিলাম ভাইয়ের ছেলে তারাক্কীর উত্তরা বাসায়, দুবার ঈদ করেছি কাবুল আফগানিস্তানে। এছাড়া প্রতিবার প্রবাসে ঈদ কেটেছে অস্ট্রেলিয়ায় হয় মেলবোর্ন না হয় ব্রিসবেন। মজলিশী মানুষ ,বন্ধু ,আত্মীয় পরিজন পরিবেষ্টিত হয়ে আনন্দমুখর পরিবেশ আমার পছন্দ। সেই ফরিদপুর শহরে কাটানো শিশুকাল থেকে ঈদ অনাবিল আনন্দে উপভোগ করতাম।
আমার পিঠাপিঠি ভাই সাকি আর আমার জন্য ১৯৬৯ বাবা বেঁচে থাকা পর্যন্ত দুই জনের জন্য দুটি খাসি কেনা হতো কুরবানীতে উৎসর্গ করার জন্য। আমাদের পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে ছিল মধুর সম্পর্ক। ঈদ উপলক্ষে আমরা সারা পাড়া মাতিয়ে রাখতাম মনে আছে।একসময় গ্যাস সেক্টরের কাজে অনেক ব্যাস্ত হয়ে পড়ায় অনেক ঈদ কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্বশুরালয়ে। আমি কিন্তু ঈদের দিন নামাজ পড়ার সময় ছাড়া অধিকাংশ সময় কাজ করতাম। তবুও অবসরে পরিবার পরিজন নিয়ে মধুর সময় কাটিয়েছি। প্রবাসে এসে বাংলাদেশ ঈদ পার্বনে অনেক মিস করি।
ছেলে দুটো বড় হবার পর দুইজন দুই জায়গায় ( মেলবোর্ন এবং ব্রিসবেন ) কাজ করতো। এবারই অনেক দিন পর ছোট ছেলে অভ্র ব্রিসবেন চলে আশায় অনেক দিন পর দুই ছেলে আর দুই নাতি নিয়ে আনন্দে ঈদ কাটালাম।
সকালে অভ্র আমাকে ৭ টায লোগান সিটির বাসা থেকে তুলে নেয়।শুভ্র দুই নাতি নিয়ে আগেই লোগান রিজার্ভ ঈদ ময়দানে পৌঁছে। বিভিন্ন দেশের প্রায় একহাজার মুসুল্লীর মাঝে আমরাই একমাত্র বাংলাদেশী অস্ট্রেলিয়ান পরিবার ছিলাম। এখানে কিন্তু ব্যাক্তিগত আয়োজনে কুরবানী দেয়া প্রায় অসম্ভব। আমরা বিকল্প উপায়ে খাসি কোরবানী দিয়েছে।
কিন্তু কুর্নির মাংস পেতে এক দিন অপেক্ষা। তবুও রোজি বরাবরের মতো পিঠা ,পায়েস রান্না করেছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আনন্দেই কেটেছে দিন টি। বাংলাদেশে ভাই সাকি ,যুক্তরাষ্ট্র ,কানাডায় ভাইয়ের মেয়েদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ হয়েছে। জানিনা আর কখনো পুরো পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে ঈদ করার সুযোগ হবে কিনা ?