সালেক সুফী।।
আমদানিকৃত জ্বালানি বিশেষত এলএনজি নির্ভর বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর তার প্রমান হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বাংলাদেশ। সুপার সাইক্লোন মখার আতঙ্কে মহেশালীর উপকূলে থাকা মার্কিন কোম্পানির ভাসমান টার্মিনাল বিযুক্ত করে গভীর সাগৰে সরিয়ে নেয়া হয় এবং সামিট গ্রুপের ভাসমান টার্মিনাল থেকেও ১২ মে থেকে সরবরাহ স্থগিত হয়। ফলশ্রুতিতে জাতীয় গ্যাস গ্রীডে গ্যাস সরবরাহ ২৮০৭ এমএমসিএফডি থেকে ২১৫৭ এমএমসিএফডি নেমে আসায় দেশ জুড়ে তীব্র গ্যাস সংকট সৃষ্টি হয়।কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানির অধীন চট্টগ্রাম বিতরণ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।ঢাকা সহ সমগ্র গ্যাস বিতরণ এলাকায় গ্যাস বিদ্যুতের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়। সাগর শান্ত হলে মার্কিন কোম্পানির ভাসমান টার্মিনাল ফিরিয়ে এনে বিশেষ প্রশিক্ষিত ডুবুরি দিয়ে ভাসমান টার্মিনাল সাবমেরিন পাইপ লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পুরো মাত্রায় এলএনজি সরবরাহ সম্ভব হবে না। সামিটের টার্মিনাল থেকে ইতিমধ্যেই এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। ভাসমান টার্মিনাল গুলো কিন্তু মেট ওশান সার্ভের উপর ভিত্তি করে ২৮০-২৯০ দিন বছরে কাজ করার কথা।এই ধরণের সুপার সাইক্লোনের ক্ষেত্রে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে অস্বাভাবিক নয়।প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ এই ধরণের সংকটের সময় কেন বিকল্প সংস্থান করতে পারে নি ? কেন নিজেদের গ্যাস ,কয়লার সরবরাহ বাড়াতে পারে নি? কেন নবায়নযোগ্য জ্বালানির সরবরাহ অন্তত ১০% হয় নি ? এগুলোর জবাব কে দিবে?
বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় নি।এই অবস্থায় নিজেদের জ্বালানি উপেক্ষা করে আমদানিকৃত জ্বালানি নির্ভর হলে কখনো উচ্চ মূল্য , কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ , কখনো ভূরাজনীতি সাপ্লাই চেন বিঘ্ন ঘটাবেই। বাংলাদেশের মহাজ্ঞানী জ্বালানি ব্যবস্থাপকদের ভ্রান্ত নীতি বর্তমান জ্বালানি সংকটের জন্য দায়ী।
পেট্রোবাংলার প্রতিবেদন বলছে গত চার দিন গ্যাস সরবরাহ ছিল নিম্ন রূপ
১০-১১ মে : ২৮০৭ এমএমসিএফডি ( এলএনজি ৬৬৯.৬ এমএমসিএফডি)
১১-১২ মে : ২৭৬০ এমএমসিএফডি ( এ০লএনজি ৬২৪.০ এমএমসিএফডি)
১২-১৩ মে : ২৫০৪ এমএমসিএফডি ( এলএনজি ৩৬২.০ এমএমসিএফডি)
১৩-১৪ মে : ২১৫৭ এমএমসিএফডি ( এলএনজি ০০০০০ এমএমসিএফডি)
২০১৮ থেকে বাংলাদেশ এলএনজি ব্যবহার করে। জানিনা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বা কন্টিনজেন্সী ম্যানেজমেন্ট নামে কিছু শিক্ষা আছে কিনা বাংলাদেশ জ্বালানী সেক্টরের ভাণ্ডারে , বলতে পারি ২০২৪.২০২৫ জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতি নাজুক হতেই থাকবে। ডলার সংকটে কয়লা , এলএনজি ,,জ্বালানি তেল কেনায় সংকট হবে. প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে কথাই নেই।