সরকারি চাকরি বিধির তোয়াক্কা না করে বিনা ছুটিতে চীন সফর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-১) শারমিন জাহান। পরবর্তীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনুমোদন করিয়েছেন সেই ছুটি। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটির অনুমোদন মেলে দেশে ফেরার ১ মাস পর।
শুধু তাই নয় শারমিন জাহানের শিক্ষা ছুটির ব্যবহার নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সর্বোচ্চ ৬ বছরে ডিগ্রি সম্পন্ন করার নিয়ম থাকলেও ৮ বছরেও ডিগ্রি শেষ করতে পারেননি তিনি। অথচ সম্প্রতি ‘মানবিক বিবেচনায়’ ডিগ্রির সনদ জমা দেয়ার সময় বাড়াতে আবেদন করেছেন। অবশ্য ৮ বছরের মধ্যে তিনি দুই বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ছিলেন। করোনার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্ক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেয় ঢাবি প্রশাসন।
আবার সরকারি চাকরিজীবীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সাবেক এ ছাত্রলীগ নেত্রী। জানা গেছে, ৭ই জুলাই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে চীনে যান। একই সময়ে শারমিন জাহানও চীন সফর করেন। তার আগে ৪ঠা জুলাই চার দিনের ছুটি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন তিনি।
কিন্তু প্রশাসন সে সময় তার ছুটি অনুমোদন করেনি। আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটি মঞ্জুরের নথি না পেলেও ক্ষমতা দেখিয়ে চীনে চলে যান তিনি। যোগ দেন বাংলাদেশি ডেলিগেটদের সব ইভেন্টে। এক্ষেত্রে বাধা হয়নি নিরাপত্তা ইস্যুও। এরপর দেশে ফিরে শেখ হাসিনার সফর সঙ্গী হয়েছেন এমন তথ্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করে নেন বলে অভিযোগ। শেখ হাসিনার পতনের পর ব্যাকডেটে তার সেই ছুটি অনুমোদন করেন সাবেক ভিসি। কিন্তু রেজিস্ট্রার অফিসের সংশ্লিষ্ট শাখা নিয়ম মেনে সেটি নথিভুক্ত করে ৭ই আগস্ট। আর ছুটি অনুমোদনের চিঠি তাকে দেয়া হয় ১৪ই আগস্ট।
এদিকে ৫ বছর বেতনসহ ও এক বছর বিনা বেতনে শিক্ষা ছুটির নিয়ম থাকলেও শারমিন জাহান ৮ বছরেও শেষ করতে পারেননি ডিগ্রি। গত ২৫ই জুন তার ডিগ্রির সনদ জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল। নতুন করে সনদ জমা দেয়ার সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৬ বছরে যদি কেউ সনদ জমা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে তিনি ৫ বছর বেতন ভাতা সহ ভোগ করা সমপরিমাণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেবেন। এ ক্ষেত্রে তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় ৪০ লাখের অধিক টাকা পেতে পারেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হন শারমিন জাহান। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শারমিন জাহান বলেন, চিঠি ১৪ই আগস্ট পেলেও আমার ছুটির অনুমোদন হয়েছে আগে। তারপরই আমি চীনে গিয়েছি। আর নিয়মিত যাতায়াত করায় আমার কাছে এনওসি-ও চাওয়া হয় না। অনেক সময় আমি নিজেই এনওসি দেখাই। যে ডকুমেন্ট দেখিয়ে তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেছেন সেই অনুমোদিত কপি চাইলে সরবারহ করতে পারেননি শারমিন জাহান। বলেন, এটা আমার অফিস ফাইলে আছে। আর মোবাইল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সফট কপি হারিয়ে গেছে।
এ ছাড়া ডিগ্রির সনদ জমার সময় বৃদ্ধির আবেদনের বিষয়ে শারমিন জাহান বলেন, কোভিড পরবর্তী আমার জীবনে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। এ কারণে ডিগ্রিটি সময়মতো শেষ করতে পারিনি। এ ছাড়া ২০২০ সালের ১৬ই মার্চ অফিসে যোগদান করলেও সেটি অনুমোদন করা হয়নি। এরমধ্যে মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর ২০২২ সালে ৭ই জুন যোগদানের আবেদন করি। যেটি ১৫ই সেপ্টেম্বর অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। তারা সেই সময় পিএইচডির সনদ অথবা টাকা ফেরতের কথা বলে।
এ ছাড়া মাস্ক কেলেঙ্কারিতে জেল খাটার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি মিথ্যা মামলা ছিল। আমার কোনো ব্যবসা নাই। সেটি আমার স্বামীর। ব্যক্তি কাজে চীনে গিয়ে নিরাপত্তা ডিঙিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদলের অনুষ্ঠানে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হলেন- এমন প্রশ্নে বলেন, আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কের মাধ্যমে সেসব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
Организуйте перевозку по минимальной цене с услугой попутного груза для России
gonzo’s quest на деньги
gonzo’s quest бесплатно
Снижайте затраты на транспортировку с услугой попутный груз из Новосибирска