সালেক সুফী।।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রবাসী আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি কর্মীরা ওয়াশিংটনে হোটেলের সামনে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সংঘর্ষ ব্যাপ্তি লাভ করেনি। দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নিজেদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। গণতান্ত্রিক দেশে ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর ভিন্নমত থাকতেই পারে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে দোষের কিছু নেই. কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া দুনিয়ার খুব কম দেশ তাদের সরকার প্রধানের বিদেশ সফর কালে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে দেশের ভাবমূর্তিতে কালিমালিপ্ত করে।এই সংঘর্ষের মাদ্ধমে কি ইঙ্গিত দিলো দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল?
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমনিতেই দেশের মাটিতে সরকারি দল এবং বিরোধী দলগুলো মুখমুখি অবস্থানে। বিপরীত মেরুতে অবস্থাকারী দুটি রাজনৈতিক শক্তি নিজেদের সমস্যা নিয়ে গেছে বিদেশী শক্তি আর গোষ্ঠীর কাছে। যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশগুলো কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমানায় দাঁড়িয়ে নানা ইঙ্গিতে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক , স্বচ্ছ , বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের তাগাদা দিচ্ছে। বর্তমান সরকার পর পর তিন টার্মে ১৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায়। দেশের অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে , দুর্নীতি , অর্থপাচার নিয়ে অভিযোগ আছে। তবুও খাদ্য নিরাপত্তা , জ্বালানি নিরাপত্তা , অবকাঠামো উন্নয়ন অর্জন নিয়ে সরকার প্রধানের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা অর্জন করেছে। এমনকি চলমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিশ্বব্যাংক , আইএমএফ শীর্ষ কর্মকর্তরা বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার ঘোষণা দিয়ে সহজশর্তে ঋণ প্রধানের ঘোষণা দিয়েছে। একইভাবে আইএমএফ অর্থসহায়তার চুক্তি করেছে। সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে দেশের নিরপেক্ষ অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক পার্টনারশীপ গোল্ডেন জুবিলী ( ৫০ বছর) আনুষ্ঠানিকভাবে উৎযাপন করা হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এই উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়।অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ উন্নয়ন নিয়ে শীর্ষ কর্মকর্তারা বিপুল প্রশংসা করেন। কিন্তু এই অর্জনের অনেকটাই দুটি রাজনৈতিক দলের প্রবাসী একটিভিস্টদের সংঘাতে ম্লান হয়েছে বলা যায়।
রাজনৈতিক বিভেদ থাকবেই। তাই বলে প্রবাসে নিজেদের ঘরোয়া বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পরে নিজেদের ঝগড়াটে মনোভাব বিদেশিদের সামনে তুলে ধরা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি প্রবাসীদের দেয়া সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভাষণের শব্দচয়ন আরো পরিশীলিত হতে পারতো। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলো আরো সংযত আচরণ করা উচিত। বিষত সবাই যখন গণতন্ত্রের কথা বলে। অসহিষ্ণুতা কখনো গনত্রন্ত্রের সাথে মানায় না।