ক্রীড়া প্রতিবেদক।।
সিরিজ নিশ্চিত ছিল আগেই, তবে ইংল্যান্ডের সামনে ছিল হোয়াইটওয়াশের সুযোগ। অবশ্য অদম্য বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে এসে ঠিকই জ্বলে উঠল। টাইগারদের বোলিং তোপে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হলো ইংলিশরা। সিরিজ হারলেও সান্ত্বনার জয় ঠিকই তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে ২৪৬ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৪৩.১ ওভারে ১৯৬ রানে অল আউট হয়েছে ইংল্যান্ড। টাইগারদের জয় ৫০ রানে। ম্যাচ হারলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে ইংলিশরা।
ইংল্যান্ডের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন জেসন রয় ও ফিল সল্ট। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন তারা। নবম ওভারে পূরণ করেন ফিফটির পার্টনারশিপ। একই ওভারে সাকিবের বলে রিয়াদের তালুবন্দী হন ৩৫ রান করা সল্ট। তিনে নামা ডেভিড মালানকে রানের খাতা খুলতে দেননি এবাদত হোসেন। আরেক ওপেনার রয়কে পরের ওভারেই বোল্ড করেন সাকিব। এ ওপেনার করেন ১৯ রান।
মাত্র এক রান করতেই তিন উইকেট হারিয়ে বেশ চাপের মুখে পড়ে ইংল্যান্ড। এ সময় দলের হাল ধরেন জেমস ভিন্স ও স্যাম কুরান। ব্যাটিং ধস সামলানোর পাশাপাশি দুজনে রানের গতিও সচল রাখেন। সে ধারাবাহিকতায় গড়েন ৪৯ রানের জুটি। ক্রমেই ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
কুরানকে লং অনে লিটন দাসের তালুবন্দী করেন মিরাজ। এ অলরাউন্ডার ফেরেন ২৩ রানে। অপরপ্রান্তে ক্রমেই বিপদজনক হয়ে ওঠা ভিন্সকে মুশফিকের তালুবন্দী করেন সাকিব। এ ব্যাটার ৩৮ রানে আউট হওয়ার পরের ওভারে ফেরেন মঈন আলী। ইংলিশ অলরাউন্ডারকে ২ রানে বোল্ড করেন এবাদত।
ইংল্যান্ডের ভরসা হয়ে লড়াই করতে থাকা জস বাটলারকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন তাইজুল ইসলাম। আদিল রশিদকেও ফেরান তিনি। এরপর রিহান আহমেদকে আউট করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। শেষ উইকেটে ১৪ রানের জুটি গড়ে টাইগারদের জয় বিলম্বিত করেন ক্রিস ওকস অ জোফরা আর্চার।
বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান একাই চার উইকেট নেন। এছাড়া এবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম দুটি করে এবং মেহেদী মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দলের হয়ে তার সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস। প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই স্যাম কুরানের বলে উইকেটের পেছনে তালুবন্দী হন লিটন। এর মাধ্যমে টানা দুই ম্যাচে শুন্য রানে সাজঘরে ফিরলেন তিনি।
নিজের পরের ওভারে এসে ফের সাফল্যের দেখা পান কুরান। এই অলরাউন্ডারের করা ওভারের শেষ ডেলিভারির আউটসুইঙ্গার বুঝতেই পারেননি তামিম। তিনি ফ্লিক করতে গেলে বল ব্যাটের কানায় লেগে ওপরে উঠে যায়। যা সহজেই তালুবন্দী করেন জেমস ভিন্স। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ বলে ১১ রান করেন টাইগার অধিনায়ক।
মাত্র ১৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তবে সেখান থেকে বিপর্যয় সামাল দেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। দুজনে গড়েন ৯৮ রানের বড় জুটি। শান্ত ও মুশফিকের ব্যাটে যখন ম্যাচে আধিপত্য বিস্তারের পথে বাংলাদেশ, তখনই ভাঙে দুজনের জুটি। যেখানে রান আউটের শিকার হয়ে ৫৩ রানে ফেরেন শান্ত।
তার বিদায়ের পরপরই ফিফটির দেখা পান মুশফিক। দীর্ঘদিন পর বড় ইনিংসের দেখা পাওয়া এ ব্যাটার থামেন ৭০ রানে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এদিন ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। আফিফ হোসেন ১৫, মেহেদী মিরাজ ৫ ও তাইজুল ইসলাম ২ রানে সাজঘরে ফেরেন। এর আগে ৫৫ বলে ফিফটি পূরন করেন সাকিব আল হাসান।
ইনিংসের শেষদিকে আউট হওয়ার আগে ৭৫ রানের অনবদ্য এক ইনিংস উপহার দেন সাকিব। তিনি বিদায়ের পরের বলেই মুস্তাফিজুর রহমান লেগ বিফোরের শিকার হলে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আর্চার তিনটি, স্যাম কুরান ও আদিল রশিদ দুটি এবং রিহান আহমেদ একটি করে উইকেট শিকার করেন।